দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ প্রাচীন যুগ (বাংলা সাহিত্য)
চর্যাপদ
- বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের একমাত্র নিদর্শন– চর্যাপদ।
- চর্যাপদ হচ্ছে– বৌদ্ধ সহজিয়া সাধন সংগীত।
- চর্যাপদের মূল নাম– চর্যাচর্যবিনিশ্চয়।
- ‘চর্যা’ শব্দের অর্থ– আচরণ।
- চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয়– নেপালের রাজদরবার থেকে। (২৮তম বিসিএস)
- চর্যাপদ আবিষ্কৃত সাল– ১৯০৭ সালে। (৩৪তম, ৩০তম বিসিএস)
- চর্যাপদের পুঁথি গুলো বই আকারে প্রকাশিত হয়– ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে।
- চর্যাপদের পদগুলো রচিত– মাত্রাবৃত্ত ছন্দে। (৩৩তম বিসিএস)
- ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’ এর অর্থ– কোনটি আচরণীয়, আর কোনটি নয়। (৩৭তম বিসিএস)
- ‘চর্যাপদ’ এর আবিষ্কারক- হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। (১৭তম বিসিএস)
চর্যাপদের পদকর্তা ও পদ সংখ্যাঃ
- চর্যাপদের পদকর্তা হিসেবে পাওয়া যায়– মোট ২৩ জন, মতান্তরে ২৪ জনের পরিচয়।
- চর্যাপদ কর্তাদের নামের শেষে যোগ করা হয়েছে– গৌরবসূচক ‘পা’।
- চর্যাপদের পদকর্তাদের পরিচয় পাওয়া যায়– গানের মাঝে ও শেষে ভনিতা থেকে।
- চর্যাপদ কত তারা প্রায় সকলেই– বৌদ্ধ চৌরাশি সিদ্ধার অন্তর্গত।
- ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের প্রাচীনতম চর্যাকর– শবরপা।
- ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের আধুনিকতম পদকর্তা– ভুসুকুপা বা সরহপা।
- ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের পদ রয়েছে– ৫০ টি। প্রাপ্ত পদ- সাড়ে ছেচল্লিশ টি।
- ড.সুকুমার সেনের মতে, চর্যাপদের পদ রয়েছে– ৫১ টি।
- চর্যাপদের সবচেয়ে বেশি পদ রচয়িতা– কাহ্নপা। (৩৫ তম বিসিএস)
- চর্যাপদ এর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদের রচয়িতা– ভুসুকুপা।
- ভুসুকুপা ছিলেন– সৌরাষ্ট্রের রাজপুত্র।
- চর্যাপদের প্রথম পদ রচয়িতা ও আদি কবি– লুইপা। (২৯তম বিসিএস)
- চর্যাপদের যে কবির নাম পাওয়া গেলেও পদ পাওয়া যায়নি– লাড়িডোম্বিপা
- চর্যাপদের যেসব পদ পাওয়া যায়নি– ২৩ নং খন্ডিত, ২৪নং পদ, ২৫নং পদ এবং ৪৮নং পদ।
- চর্যাপদের যে পদটি ঠিকাদার কর্তৃক ব্যাখ্যা করা হয়নি– ১১নং পদ।
পদের সংখ্যা ও পদকর্তাদের নামের তালিকা
চর্যাপদের ভাষাঃ
- ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের ভাষা– বঙ্গ কামরূপী।
- চর্যাপদের মূলত ব্যবহৃত হয়েছে– প্রাচীন বাংলা ভাষা।
- চর্যাপদের ভাষা দুর্ভেদ্য হওয়ার কারণ– তন্ত্র ও যোগের প্রতাপ এর জন্য।
- অস্পষ্টতার জন্য চর্যাপদের ভাষাকে– সন্ধ্যাভাষা বা সান্ধ্যভাষা বলে। (৩৮তম বিসিএস)
- চর্যাপদের ভাষার প্রভাব রয়েছে– হিন্দি, অসমীয়া, উড়িষ্যা ও মৈথিলী ভাষা।
- চর্যাপদের বিষয়বস্তু( তত্ত্বকথা)
- চর্যাপদ রচনার উদ্দেশ্য– ধর্মচর্চা।
- চর্যাপদ এর অনেকগুলো পদ মূলত– গানের সংকলন।
- চর্যাপদের যে বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে– সাধন তত্ত্ব।
- চর্যাপদ এর প্রধান তথ্য– মহাসুখরূপ নির্বাণ লাভ।
- চর্যাপদে মূল বস্তু– বৌদ্ধ ধর্মের তত্ত্ব কথা।
চর্যাপদের বাঙালি কবি
- প্রথম বাঙালি কবি হিসেবে পূর্ণাঙ্গ পদ রচনা করেন– লুইপা।
- বাঙালি কবির মধ্যে– ভুসুকুপা এর সর্বাধিক পদ (৮টি) পাওয়া যায়।
- ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের প্রাচীন কবি শবরপা ছিলেন– বাঙালি।
- তারকনাথ এর মতে, লুইপা বসবাস করতেন– গঙ্গার ধারে।
- বেশিরভাগ পণ্ডিতগণের মতে– ভুসুকুপা ছিলেন বাঙালি।
- কোন কবি নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিয়েছেন– ভুসুকুপা। (৩০তম বিসিএস)
চর্যাপদের প্রথম পত্র হচ্ছে- ‘কাআ তরুবর পাঞ্চ বি ডাল / চঞ্চল চীএ পৈঠা কাল।(লুইপা রচিত)
চর্যাপদ এর আনুমানিক বয়স ধারণা করা হয়– একহাজার বছর প্রায়।
চর্যাপদের পথগুলো টিকার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন– মুনিদত্ত।
চর্যাপদের প্রবাদ বাক্য পাওয়া যায়– ৬টি।
সহজিয়া সম্প্রদায়ের সাধন পদ্ধতিকে বলা হয়– সহজযান পন্থী।
সহজিয়া সম্প্রদায়ের সকলে– বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ও বাউল সম্প্রদায়।
সহজিয়া সম্প্রদায়ের পার্থক্য পাওয়া যায়– সাধন পদ্ধতির ভিন্নতার জন্য।
সর্বপ্রথম চার্জার ভাষাতাত্ত্বিক পর্যালোচনা করেন– ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, তার গ্রন্থ (Origin and development of the Bengali language)
চর্যাপদের সম্পর্কে বিস্তারিত পর্যালোচনা ও সম্পাদিত করেন– ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ১৯২৭ সালে(গ্রন্থ, Buddhist Mystic Songs)। (৩৭তম বিসিএস)
চর্যাপদের আবিষ্কারক ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী(১৮৫৩ থেকে ১৯৩১)
ড.হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর জন্ম– ৬ ডিসেম্বর ১৮৫৩।
ড.হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর জন্মস্থান– নৈহাটি, পশ্চিমবঙ্গ।
ড.হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর অমর কীর্তি– বাংলা ভাষার প্রথম গ্রন্থ “চর্যাপদ” উদ্ধার।
ড.হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপাধি– মহামহোপাধ্যায়।
ড.হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ছিলেন– সাহিত্য, ভাষা, দর্শন, ইতিহাস ও প্রত্যন্ত বিষয়ে পন্ডিত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
তিনি চর্যাপদ আবিষ্কারের সফল হন– তৃতীয় বারের চেষ্টায় ( প্রথম দুই বার ব্যর্থ হন)।
তিনি চর্যাপদ ছাড়াও আরো আবিষ্কার করেন– দোহাকোষ ও ডাকার্নব নামক গ্রন্থ। (৩৫তম বিসিএস)
তিনি সবগুলো বই প্রকাশ করেন– ‘ হাজার বছরের পুরানো বাংলা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা’ নামে, ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে।
ড.হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মৃত্যু– ১৭ নভেম্বর ১৯৩১ সালে।
0 Comments